উইকিগ্যাপ অনুষ্ঠানের সমাপনী অনুষ্ঠানের দলগত ছবি। ছবি: আলীম বারী/সিসি-বাই-এসএ ৪.০

ঢাকায় অনুষ্ঠিত হল উন্মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়ায় নারীদের অংশগ্রহণ ও নারী বিষয়ক তথ্য বৃদ্ধিতে আয়োজিত ‘উইকিগ্যাপ’ শীর্ষক ক্যাম্পেইনের সমাপনী অনুষ্ঠান।

এর আগে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশ ও সুইডিশ দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে বাংলা উইকিপিডিয়াতে নারী বিষয়ক তথ্য সমৃদ্ধ করতে ১৫ দিনব্যাপী একটি নিবন্ধ লেখার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

২৩ জুন, রবিবার ঢাকায় নিযুক্ত সুইডিশ রাষ্ট্রদূত সার্লোট্টা স্লাইটার তাঁর বাসভবনে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশ, অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সাংবাদিক প্রতিনিধিদের নিয়ে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে সেরা ১০ জন উইকিপিডিয়া-অবদানকারীকে সনদ প্রদান করেন।

সনদ গ্রহণকারী সেরা ১০ জন উইকিপিডিয়া অবদানকারী হলেন: এস এম নাজমুস সাকিব, শাহিদুল হাসান রোমান, শাহাদাত হোসেন, মো. ইকবাল হোসেন, তাসমিন আক্তার তৃপ্তি, মো. মোস্তাফিজুর রহমান, এস এম সাজ্জাদুল হক তানিম, মো. দেলোয়ার হোসেন, তামিম মাহমুদ এবং মাহবুবুল হক ওয়াকিম।

অনুষ্ঠানে সনদ গ্রহণকারীদের মধ্যে উইকিগ্যাপ প্রতিযোগিতায় তাঁদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন তাসমিন আক্তার তৃপ্তি ও এস এম নাজমুস সাকিব।

অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন দূতাবাসের যোগাযোগ কর্মকর্তা আলীম বারী এবং সুইডিশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্কীত সেকেন্ড সেক্রেটারি ইলভা ফেস্টিন।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত সার্লোট্টা স্লাইটার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, “২০১৮ খ্রিস্টাব্দে উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশনের সুইডিশ চ্যাপ্টার, উইকিমিডিয়া সুইডেন ও সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যৌথভাবে উইকিপিডিয়াতে নারী বিষয়ক নিবন্ধ বৃদ্ধি ও উইকিপিডিয়ায় নারীদের অবদানকে উৎসাহ দিতে ‘উইকিগ্যাপ’ নামের এই ক্যাম্পেইন শুরু করে। জেন্ডার-ইকুয়্যাল ইন্টারনেট তৈরির লক্ষ্যে আয়োজিত এই ক্যাম্পেইন পরবর্তীতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সুইডিশ মিশন ও উইকিপিডিয়া নিয়ে কাজ করা স্থানীয় উইকিমিডিয়া চ্যাপ্টারের সাথে মিলে স্থানীয় ভাষায় বিস্তার লাভ করে।”

তিনি আরও বলেন, “বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে সুইডেন নারীবান্ধব পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেছে।” ইন্টারনেটে তথা উইকিপিডিয়ায় কনটেন্ট গ্যাপ কমাতে তাঁরা ভবিষ্যতে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশসহ অন্যান্য সমমনা স্থানীয় সংস্থার সাথে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক নাহিদ সুলতান (এই প্রতিবেদক), কোষাধ্যক্ষ তানভির মোর্শেদ, সম্প্রদায় পরিচালক আফিফা আফরিন, বাংলা উইকিপিডিয়ার প্রশাসক ইব্রাহিম হোসেন মেরাজ, বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরামের (বিআইজেএফ) সভাপতি মোজাহেদুল ইসলাম ঢেউ, দৈনিক প্রথম আলো’র জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক বাদশা মিন্টু, দ্য ডেইলি স্টারের তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিবেদক শাহরিয়ার রহমান, দৈনিক কালের কণ্ঠের জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক রিদওয়ান আকরাম, দৈনিক সংবাদের মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন, দৈনিক সমকালের তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিবেদক আব্দুর রাজ্জাক সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উইকিগ্যাপ প্রসঙ্গে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের সভাপতি শাবাব মুস্তাফা বলেন, “আমরা ২০১৮ থেকে ঢাকার সুইডিশ দূতাবাসের সাথে যৌথভাবে বাংলা উইকিপিডিয়াতে উইকিগ্যাপ ক্যাম্পেইনটি পরিচালনা করছি। এর অধীনে ২০১৮ ও ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে বাংলা উইকিপিডিয়াতে ৭০০টির বেশি নারী বিষয়ক নতুন নিবন্ধ তৈরি হয়েছে।”

অনুষ্ঠানে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে উইকিপিডিয়ার কার্যক্রম তুলে ধরা হয়।

অনুষ্ঠানে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের কার্যক্রম তুলে ধরছেন তানভির রহমান ও আফিফা আফরিন। ছবি: শাহিদুল ইসলাম রোমান/সিসি-বাই-এসএ ৪.০

এবছর (২০১৯) উইকিগ্যাপ ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে মে মাসে বাংলা উইকিপিডিয়াতে একটি নিবন্ধ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় ৬২জন অংশগ্রহণকারী মিলে বাংলাতে ৬৪০টি নতুন, নারী বিষয়ক নিবন্ধ তৈরি করেন।

উল্লেখ্য, ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশসহ ৬০টি দেশের সুইডিশ মিশন ও স্থানীয় উইকিমিডিয়া চ্যাপ্টার প্রথম এই ক্যাম্পেইন আয়োজন করে যার মাধ্যমে ১,৮০০ অংশগ্রহণকারী উইকিপিডিয়াতে অবদান রেখে ১৩ হাজার নারী-বিষয়ক উইকিপিডিয়া আর্টিকেল তৈরি করেন।

এবছর ৫০টি দেশে এই ক্যাম্পেইন আয়োজন করা হয়। দুই বছরে ৬০টি দেশের ২,৪৫০জন অংশগ্রহণকারী বাংলাসহ ৩০টি উইকিপিডিয়া ভাষা সংস্করণে অবদান রেখে ২৭ হাজার নারী বিষয়ক উইকিপিডিয়া নিবন্ধ তৈরি করেন।

উইকিবার্তা
Translate »
Share This