উইকিপিডিয়ার কথা শুনলেই মনের মাঝে ভেসে ওঠে নিরপেক্ষ তথ্য সম্বলিত এক অনলাইন বিশ্বকোষের কথা। বিশ্বের ৩০১টি ভাষায় এই বিশ্বকোষের সংস্করণ চালু আছে। দুইজন ব্যক্তির মাঝে যদি কোনো বিষয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়, তারা বিতর্ক নিরসনের জন্য উইকিপিডিয়ার শরণাপন্ন হন। বোধ করি, অগণিত স্বেচ্ছাসেবীর হাতে গড়ে ওঠা এই বিশ্বকোষটার সবচেয়ে বড় সাফল্য এটি।
তবে হ্যাঁ, উইকিপিডিয়াকে মাঝে মাঝে অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীনও হতে হয়। যেমন, মাঝে মাঝেই বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ বা অন্য মাধ্যমগুলোতে আলোচনা বা সমালোচনা হতে দেখা যায়।
এসময় কেউ কেউ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা উইকিপিডিয়া নিবন্ধে বিভিন্ন আক্রমণাত্মক অথবা আপত্তিকর শব্দ বা বাক্য যুক্ত করা চেষ্টা করেন, যা বিশ্বকোষীয় নীতিমালার সাথে যায় না। তখন উইকিপিডিয়ার প্রশাসকগণ নিবন্ধটির সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
উইকিপিডিয়ার অবদানকারীগণ প্রতিনিয়ত নিবন্ধের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন, যা বিশ্বকোষটিকে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্যের সমাবেশ হিসেবে পরিচিত হতে সাহায্য করেছে। একবার ভাবুন তো, যদি www.wikipedia.org ওয়েবসাইটটা পৃথিবী থেকে গায়েব হয়ে যায় তবে কী অসুবিধায় পড়ব আমরা?
সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়বে শিক্ষার্থীরা, যারা বিনামূল্যে এই বিশ্বকোষ থেকে পড়াশোনা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে থাকেন। উইকিপিডিয়া গুজব ছড়ানো রোধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
উইকিপিডিয়া কাজ করে চলেছে সবার জন্য নির্ভরযোগ্য তথ্য নিশ্চিত করতে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বিলাসবহুল বাড়িতে বসবাসকারী মার্কিন বিলিয়নিয়ার থেকে শুরু করে নাইজেরিয়ার লাগোসের বস্তিবাসী এক যুবক, সবাই এই বিশ্বকোষটিতে অবদানের মাধ্যমে মাতৃভাষায় জ্ঞানভাণ্ডার সমৃদ্ধ করে থাকেন।
তবে হ্যাঁ, মানুষ মাত্রই ভুল হয়। স্বেচ্ছাশ্রমে পরিচালিত এই বিশ্বকোষটির কিছু ভুলত্রুটি থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। স্বেচ্ছাসেবীদের এইসব ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি উইকিপিডিয়া সাইট পরিদর্শনকারীদের। তবে, আপনি চাইলে এক ক্লিকেই কোনো ভুলও শুধরে দিতে পারেন। আর হ্যাঁ, তথ্যের সঙ্গে থাকুন, জ্ঞানের সঙ্গে থাকুন!
লেখক: এস. এম. নাজমুস শাকিব, বাংলা উইকিপিডিয়ার অবদানকারী