
ছবি: বাংলা উইকিপিডিয়ার স্ক্রিনশট
রাজনৈতিক মেরুকরণকালীন ফেসবুক, টুইটার কিংবা ইউটিউব – যাবতীয় জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ভুল তথ্যে ভরপুর হয়ে ওঠে। অনলাইন জনপ্রিয় বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়া, যা কিনা যে-কেউ সম্পাদনা করতে পারেন, সেই উন্মুক্ত জ্ঞানের মাধ্যমও কি তখন ভুল তথ্যের কবলে পড়ে?
এমনটা মনে হওয়াটা স্বাভাবিক হলেও বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। আদর্শগতভাবে ভিন্ন ভিন্ন অবদানকারীরা যখন উইকিপিডিয়ায় লেখেন, তখন মূলত নিবন্ধের গুণমান সমৃদ্ধ হয়। ন্যাচার হিউম্যান বিহেভিয়ার জার্নালে প্রকাশিত হওয়া ‘দ্য উইসডম অব পোলারাইজড ক্রাউডস’ শীর্ষক নিবন্ধে এমনটাই জানা গেছে।
ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর নলেজ ল্যাবের গবেষণায় দেখা গেছে কিভাবে একদল মানুষ একত্রে কোনো বিষয় সম্পর্কে জানেন। গবেষণার জন্য তাঁদের নজর যায় উইকিপিডিয়ায় জ্ঞান সৃষ্টি করার প্রক্রিয়ার দিকে। প্রতিটি উইকিপিডিয়া নিবন্ধের সাথে থাকে আলাপ পাতা, যেখানে অবদানকারীরা বাকি অবদানকারীর তাঁর সম্পাদনা গ্রহণ করতে উৎসাহিত করার চেষ্টা করেন।
নলেজ ল্যাবের পরিচালক এবং সমাজতত্ত্বের অধ্যাপক জেমস ইভান্স উইকিপিডিয়ার ২,০০,০০০-এরও বেশি অবদানকারীর উপর গবেষণা চালান। তিনি দেখতে পান যখন অবদানকারীদের একটি গোষ্ঠী রাজনৈতিকভাবে নির্দিষ্ট মতাদর্শী হন, তখন উক্ত নিবন্ধের তথ্যের গভীরতা এবং সঠিকতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়; পক্ষান্তরে তাঁরা আদর্শগতভাবে একইরকম হলে নিবন্ধের গুণমান হ্রাস পায়।
জার্নাল নিবন্ধটির সহ-লেখক এবং ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলিনা অ্যাট চ্যাপেল হিল-এর ডেটা সাইন্টিস্ট ফেং শি বলেন, ‘নিরপেক্ষতা, সঠিক তথ্যসূত্র এবং উন্মুক্ততা ইত্যাদির সমন্বয়ে তৈরি উইকিপিডিয়ার সুনির্দিষ্ট সম্পাদনা নীতিমালা বৈচিত্র্য তৈরির মূল কারিগর’।
উদাহরণস্বরূপ, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিবন্ধে সম্পাদকরা একমত হয়েছেন যে, নতুন কোনো তথ্য যোগ করলে এবং সেই তথ্যটা কেউ সংশোধন করলে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় কেবলমাত্র একবার সেই সংশোধন বাতিল করা যাবে। অন্যথায় সম্পাদনা যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে।
উইকিপিডিয়া যে-কেউ সম্পাদনা করতে পারেন, তাই এর নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে বিভিন্ন সময়েই প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। যদিও নির্ভরশীল তথ্যভাণ্ডার হিসেবে উইকিপিডিয়াকেই সর্বাগ্রে গ্রহণ করা হয়ে থাকে। জার্নাল নিবন্ধটি এধরণের প্রশ্নের উত্তরে সহায়ক হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।