উইকিপিডিয়ায় যারা লিখেন, আপাতদৃষ্টিতে নিজের অঢেল সময় তারা শ্রেফ নষ্ট করেন বলেই মনে হয়। কিন্তু যে বিপুল জ্ঞানের সাথে তাঁরা থাকেন, আর তাতে যে তাঁদের কী অসম্ভব উপকার হয়, তা কেবল অবদানকারীরাই জানেন। এই অবদান রাখার প্রক্রিয়াতে কত জনের যে কত বিচিত্র অভিজ্ঞতা আছে, তার ইয়ত্তা নেই। আমার সেরকমই একটা গল্প আছে:
২০১০ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বরে, আমার জন্মতারিখে, আমার বন্ধু নাকিব আমাকে উপহার দিয়েছে। বাক্সের ভিতরে, জিনিসটা যাতে না ভাঙে, তাই পত্রিকা দিয়ে ওটা মোড়ানো ছিল। উপহার বের করে পত্রিকাটা ওখানেই পড়ে ছিল। ফেলবার সময় হঠাৎই চোখ গেল পত্রিকার দিকে, পেপার-কাটিং-এর শখ ছিল তখন খুব। পত্রিকা কেটে কেটে দরকারি জিনিস জমিয়ে বড় একটা খাতায় আঠা দিয়ে আটকে রাখতাম।
তো ঐ ফেলনা পত্রিকাতেই একটা খবরে চোখ আটকে গেলো: “ছয় বছর পর আবার গুড়পুকুরের মেলা”। খবরটা পড়েই মন উশখুঁশ করতে থাকলো। কারণ, যারা ফেসবুকফিলিয়ায় ভোগেন, তাঁরা কিছু হলেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন, আর আমার তখন উইকিফিলিয়া চলছে — বিশ্বকোষীয়, উইকিপিডিয়ার উল্লেখযোগ্যতার নীতি পাশ করলেই কোনো কিছু আর পালাতে পারে না।
সাথে সাথে লেগে গেলাম উইকিপিডিয়ায় একটি নিবন্ধ লিখতে। জন্ম হলো:
গুড়পুকুরের মেলা – উইকিপিডিয়া
সেদিনে ইতিউতি খুঁজে লিখে ফেলা সেই নিবন্ধটা আজও সেই অবস্থায়ই পড়ে আছে। মাঝে মাঝে [রো]বট অ্যাকাউন্টগুলো হয়তো এটা-ওটা সংশোধন করেছে। দেখে কেউই বুঝবে না, এই নিবন্ধটা একটা ফেলনা কাগজ থেকে উঠে এসেছে।
ফেলনা থেকে হোক কিংবা গবেষণা থেকেই হোক, উইকিপিডিয়ায় অবদান রাখাটা যে খুবই সহজ – এই গল্পটা তো তা দেখিয়েই দিলো। উইকিপিডিয়ায় অবদান রাখার এরকম কিংবা আরো চমকপ্রদ বিচিত্র অভিজ্ঞতাগুলো মন্তব্য করে জানাতে পারেন আমাদেরকেও।
– মঈনুল ইসলাম মঈন
৫ ডিসেম্বর ২০১৮