উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন সম্প্রতি কাইওএস বৈশিষ্ট্যযুক্ত ফোনের জন্য সহজে উইকিপিডিয়া ব্যবহার করা যাবে এমন একটি অ্যাপ্লিকেশন চালু করেছে। কাইওএস হলো লিনাক্সভিত্তিক একধরনের ফোন অপারেটিং সিস্টেম, যা কাইওএস টেকলোজিস লিমিটেড ডেভলপ করে থাকে। বাংলাদেশ ও ভারতসহ পৃথিবীর প্রায় ১০০ মিলিয়ন মানুষ এই ধরনের ফোন ব্যবহার করে থাকে। সাধারণ মানুষের কাছে এটি মূলত বাটনযুক্ত ফোন হিসেবে পরিচিত। এতে টাচ স্ক্রিন সুবিধাটি থাকে না।
কাইওএস ফোন ব্যবহারকারীরা এর ছোট স্ক্রিন, কিবোর্ডের নেভিগেশন সমস্যা, অপারেটিং সিস্টেম ইত্যাদি কারণে ইন্টারনেট ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। তারা ইন্টারনেট ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকায় উইকিপিডিয়া তথা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়া তাদের অর্জিত জ্ঞানও এই বিশ্বকোষে যুক্ত হচ্ছেনা। এই বিশাল জনগোষ্ঠীর মধ্যে মুক্ত জ্ঞানের সহজলভ্যতা বাড়াতে উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন এমন একটি অ্যাপ্লিকেশন তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যাতে করে তারা ফোনে বিদ্যমান ইন্টারনেট ব্যবহারের স্বল্প সুবিধা কাজে লাগিয়েই সহজে উইকিপিডিয়া ব্যবহার করতে পারেন।
উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশনের ইনুকা টিম (উইকিমিডিয়া প্রকল্পসমূহকে পাঠকের কাছে সহজলভ্য করতে কাজ করে ইনুকা টিম) এটা তৈরি করে। এর বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিকূলতা দূর করতে কাইওএস টেকনোলজিস লিমিটেড এবং উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে সাথে কাজ করেছে। এরপর পরীক্ষামূলকভাবে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ৭ সেপ্টেম্বর থেকে ভারতে অ্যাপ্লিকেশনটির কার্যক্রম শুরু করা হয়। মাত্র তিন মাসের মধ্যে অ্যাপটি প্রায় দেড় মিলিয়ন বার ডাউনলোড করা হয়। এরপর গত ৭ ডিসেম্বর থেকে বিশ্বজুড়ে সমস্ত কাইওএস ব্যবহারকারীর জন্য অ্যাপটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের ফোনের স্ক্রিন সাধারণত ৩ ইঞ্চি বা এর কম হয়ে থাকে।
তাছাড়া টাচ স্ক্রিন না থাকায় কিবোর্ড দিয়েই যেন নিবন্ধের সকল অংশ পড়া, নিবন্ধের ভাষা পরিবর্তন করা এবং উইকিপিডিয়ার অন্যান্য সুবিধা পাওয়া যায়, তা বিবেচনা করেই নকশা করা হয়েছে। এর ব্যবহারকারীরা উইকিপিডিয়ার নিবন্ধ পড়তে পারলেও উইকিপিডিয়া সম্পাদনা, ছবি আপ্লোড করা ইত্যাদি কোনো অবদানই রাখতে পারবেন না। অবদান রাখার সুবিধাটি এখনো এতে যুক্ত করা হয়নি। তবে উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশনের ইনুকা টিমের ভাষ্যমতে পরবর্তীতে এই সুবিধা যুক্ত করা হবে। এতে করে বিশ্বের প্রায় ১০০ মিলিয়ন মানুষের কাছে উইকিপিডিয়া ব্যবহার করা এবং উইকিপিডিয়ায় অবদান রাখা সহজসাধ্য হয়ে উঠবে।